Monday, June 8, 2020

দ্বীন কায়েম বলতে আপনি কি বুঝেছেন ?


যদি আপনি এমন মনে করেন যে - ইসলামের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলঃ একটি ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করে দ্বীন কায়েম করা, তাহলে প্রশ্ন আসেঃ

১. ইসলামের যেই ৫টি রুকনের কথা নবী (সাঃ) হাদীসে জিব্রীলে উল্লেখ করলেন, তাতে এই ইকামতে দ্বীন কোথায়? তাহলে যেগুলো ইসলামের মূল বিধান তা বাদ দিয়ে ইসলামের নামে একটি নব আবিষ্কৃত লক্ষ্য উদ্দেশ্য তৈরি করা হয়নি কি?

২. ধরে নিলাম একটি ইসলামী রাষ্ট্র কেউ তৈরী করলো, কিন্তু ইসলামী রাষ্ট্র তৈরী হলেই কি সাথে সাথে কাফেররা মুমিন হয়ে যাবে এবং মুশরিকরা শির্ক বর্জন করে তাওহীদী হয়ে যাবে? ধরুন বাংলাদেশে এমন একটি সরকার আসলো, তাতে কি পীরপন্থী, কবর-মাযারওয়ালারা কবরপূজা ছেড়ে দিবে? আইনের ভয়ে যদি তারা কিছু কার্য-কলাপ বন্ধও রাখে কিন্তু তাতে কি তাদের ঈমান পরিবর্তন হবে? তাই অন্তরের পরিবর্তনই মূল পরিবর্তন, আইনী পরিবর্তন হচ্ছে সাময়িক ও মুনাফেকী পরিবর্তন।


৩. ইসলামের অধিকাংশ বিধানের প্রতি আমল করতে কি কোন ইসলামী রাষ্ট্র ক্ষমতার প্রয়োজন আছে? ইসলামী হুকুমত থাকবে তাহলেই কি আপনি নামায, রোযা, হজ্জ যাকাত দিতে পারেন, না এমনিতেই দিতে পারেন? আসলে ইসলামের অধিকাংশ বিধান মানবীয় ফিতরাতের সাথে সামঞ্জস্য রাখে তা মানতে সরকারি ক্ষমতার প্রয়োজন হয় না।

৪. ঈমান ও আক্বীদা হচ্ছে ইসলামের মূল বিষয়, তা বিশ্বাস করতে কি কোন সরকারের প্রয়োজন হয? ধরুন আরকানে ঈমানের যাবতীয় কিছু, আল্লাহর প্রতি, রাসূলগণের প্রতি, কিতাব সমূহের প্রতি, ফেরেশতাগণের প্রতি, শেষ দিনের প্রতি ও ভাগ্যের ভাল মন্দের প্রতি ঈমান রাখতে কি সরকারের দরকার হয়?

৫. ইসলামে যে সব ক্রাইমের শস্তির বিধান রয়েছে, সে সবের জন্য সরকারি ক্ষতার প্রয়োজন আছে, যাকে ‘হুদুদ’ বলা হয়। এসব হুদুদ বিশ্বের কোন মুসলিম দেশে বাস্তবায়ন করা হয় না, শুধুমাত্র সউদী আরব ছাড়া। তার পরেও তো আমাদের দেশের ইকামতে দ্বীন পন্থিীরা দিন-রাত সউদী আরবের সমালোচনাই করে যায়। তাহলে কোন ইসলামী রাষ্ট্র চান তারা?

৬. বর্তমানে যে সব মুসলিম ভাই অমুসলিম দেশে বসবাস করেন, তারা যদি ঈমান ও সৎ আমলের সহিত মারা যান, তাহলে তারা জান্নাত পাবেন না কি? তাহলে ইসলামী হুকুমত জান্নাত পাওয়ার জন্যও তো জরুরী নয়।

৭. সেই ইসলামী হুকুমত যদি কায়েম করতে হয়, তাহলে তার পদ্ধতিটা কি হওয়া উচিৎ? গণতন্ত্রের ভোটের নিয়মে নাকি অন্য কিছু? গনতন্ত্র কি ইসলাম?

শেষে বলি, ইসলামী হুকুমত কায়মে হোক, তার জন্য চেষ্টা করা হোক, কিন্তু তা হতে হবে ব্যাপক তাওহীদ ও সহীহ সুন্নাহ ভিত্তিক দাওয়াতের মাধ্যমে ব্যক্তির সংশোধন। অতঃপর সমাজ ও দেশের পরিবর্তন, অতঃপর ইসলামী হুকূমত। যেমন ছিল নবী (সাঃ) এর তরীকা, ক্ষমতার বলে নয়, দাওয়াতী সংশোধনের মাধ্যমে দেশ গঠন।


Collected from Shaykh Abdur Raquib

No comments:

Post a Comment

দাওয়াতি কাজ সকল মুসলিমের জন্য ফরজ এবং সাধারণ মানুষদের দাওয়াতি কাজের কতিপয় পদ্ধতি

  ▬▬▬✪✪✪▬▬▬ প্রশ্ন: সৎকাজে আদেশ এবং অসৎ কাজে নিষেধ কি সবার উপরে ফরজ? যাদের দ্বীনের জ্ঞান নেই যেমন জেনারেল লাইনে পড়া মানুষ কিন্তু দ্বীন জানার...